যুগে যুগে সত্যকে জানতে যারা, সত্য পেয়েছেন।

সত্যকে জানার জন্য ইমাম গাজ্জালী (রঃ) ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক, বিশ্ববিখ্যাত দর্শনশাস্ত্র ‘কিমিয়ায় সাদাত’, ‘মিনহাজুল আবেদীন’, ‘এহিয়াউ উলুমুদ্দীন’সহ অন্যান্য অনেক বিখ্যাত গ্রন্থের লেখক। কিন্তু এত বিদ্বান হওয়া সত্ত্বেও তিনি সার্বিক সমস্যা সমাধানে বৈষয়িক শিক্ষা যথেষ্ট মনে করলেন না। আধ্যাত্মিক বা আত্মিক শিক্ষার অভাব বোধ করলেন। একদিন কেঁদে কেঁদে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করলেন, কোন পথে আমার শান্তি? কোন পথে সার্বিক মুক্তি? হে প্রভু, আমাকে বলে দাও। স্বপ্নযোগে দয়াল নবীজী বললেন, ‘হে গাজ্জালী, সূফীবাদই তোমার জন্য উত্তম রাস্তা।’ ইমাম গাজ্জালী (রঃ) চিন্তায় পড়ে গেলেন, কোন গুরুকে ধরলে আত্মদর্শন এবং প্রভুদর্শন লাভ হবে এবং আত্মতৃপ্তি লাভ করা যাবে। ইবলিশ শয়তানের ধোঁকা বা ওয়াছ-ওয়াছা মুক্ত হয়ে ইনসানে কামেল হওয়া যাবে। স্থির করলেন, আবু আলী ফারমুদিই আমার জন্য আত্মরাজ্যের মহাগুরু বা কামেল মোর্শেদ। তাই তিনি চলে গেলেন পীরের দরবারে। অথচ ফারমুদি তুসী ছিলেন নিরক্ষর, লিখতে পারতেন না। এই নিরক্ষর পীরের সোহবতে এসে তাঁর খেদমত করিয়া অল্পদিনেই গাজ্জালী (রঃ) সাধনায় সিদ্ধি এবং মহান আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভ করিলেন। পাইলেন তৃপ্তি আর অফুরন্ত নিয়ামত। যা তিনি তরিকতে বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করার পূর্বে হাসিল করতে পারেন নাই। বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী বাগদাদী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন, শায়খ আবু সাঈদ মাখজুমী (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য হযরত খাজা গরিবে নেওয়াজ মঈনুদ্দীন চিশতি হাসান সাঞ্জারী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন, খাজা ওসমান হারুনীর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দী বুখারী (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন, হযরত শাহ আমির সৈয়দ কালাল (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য ইমামে রাব্বানী কাউমে জামানী গাউসে ছামদানী হযরত শায়েখ আহম্মেদ শেরহিন্দী মোজাদ্দিদ আল-ফেসানি (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, হযরত খাজা মুহাম্মদ বাকি বিল্লাহ (কুঃ ছিঃ আঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক মাওলানা জালাল উদ্দীন রুমী বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, শামসেত তাবরেজি (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য বিশ্ববিখ্যাত ‘তাফসিরে কবির’-এর লেখক ইমাম ফখরুদ্দীন রাজি বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন, হযরত নাজিমুদ্দীন কোবরার কাছে।
সত্যকে জানার জন্য ইমামে আজম আবু হানিফা (রঃ) বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, হযরত বাকের (রঃ)-এর কাছে।
সত্যকে জানার জন্য হযরত হাসান বসরী বাইয়াত বা শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন, সৈয়দ ইমাম হাসান (রাঃ)-এর কাছে।

Comments